FAQs of Islamic Banking

ইসলামিক ব্যাংকিং বিষয়ক Knowledge Sharing

More..

1) ইসলামিক ব্যাংক কী?

উত্তরঃ ইসলামিক ব্যাংক এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যার উদ্দেশ্য, মূলনীতি ও কর্মপদ্ধতির সকল স্তরে শরীয়াহ্ এর সকল নীতিমালা মেনে চলতে বদ্ধপরিকর এবং লেনদেনের সকল পর্যায়ে সুদ বর্জন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

2) ইসলামিক ব্যাংকিং এর বৈশিষ্টসমূহঃ-

  • সুদমুক্ত
  • গারার; (ধোঁকা-অস্পষ্টতামুক্ত)
  • জুয়ামুক্ত ও
  • শরীয়াহ্ অনুমোদন করে না এমন ব্যবসা ও লেনদেনমুক্ত।

3) শরীয়াহ্ কী?

উত্তরঃ "শরীয়াহ্" হচ্ছে মানব জীবনের সকল দিক পরিচালনার জন্য পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ থেকে উত্পত্তিকৃত বিধি-বিধান।

4) ব্যবসা কাকে বলে?

উত্তরঃ অর্থের বিনিময়ে পণ্য ক্রয় বিক্রয় করাকেই ব্যবসা বলে। ব্যবসায় লাভ ও লোকসান উভয়ই হতে পারে।

5) ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত আল-কুরআনের আয়াত ও হাদিসঃ-

  1. সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৫;

    যারা সুদ খায়, তারা তার ন্যায় (কবর থেকে) উঠবে, যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল বানিয়ে দেয় । এটা এ জন্য যে, তারা বলে ক্রয় বিক্রয় সুদের মতই। অথচ আল্লাহ কারবারকে হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার নিকট তার রবের পক্ষ থেকে উপদেশবাণী পৌঁছল এবং সে বিরত হল, পূর্বে যা (সুদের আদান-প্রদান) হয়ে গেছে, তা তারই। তার বিষয় আল্লাহর জিন্মায় এবং আর যারা পুনরায় (সুদের আদান-প্রদান) আরম্ভ করবে তারাই আগুনের অধিবাসী । তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।
  2. সূরা নূর, আয়াত ৩৭;

    এমন লোকেরা, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে, নামায কায়েম করা থেকে এবং যাকাত প্রদান করা থেকে বিরত রাখে না। তারা ভয় করে সেই দিনকে, যেদিন অন্তর ও দৃষ্টিসমূহ উল্টে যাবে।
  3. সূরা জুমুআ, আয়াত ১০;

    অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।

6) ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত শরীয়াহ্ কয়েকটি নীতিমালাঃ-

  1. সুদভিত্তিক লেনদেন নিষিদ্ধ;
  2. ওজন ও পরিমাপে কম বেশি করা নিষিদ্ধ ;
  3. মাদক জাতীয় ব্যবসা-বাণিজ্য নিষিদ্ধ ;
  4. ভেজাল ব্যবসা-বাণিজ্য নিষিদ্ধ এবং
  5. ঘুষের আদান-প্রদান নিষিদ্ধ ।

7) ক্রয় বিক্রয়ের কয়েকটি শর্তঃ-

  1. পণ্য হালাল হওয়া;
  2. পণ্যের অস্তিত্ব থাকা;
  3. পণ্যের মালিকানা থাকা এবং
  4. দাম নির্ধারণ করা ৷

8) বাকীতে বিক্রি করা জায়েজ কি?

উত্তরঃ হ্যাঁ, বাকীতে বিক্রি করা জায়েজ ।

9) কিস্তিতে বিক্রি করা কি জায়েজ?

উত্তরঃ হ্যাঁ, কিস্তিতে বিক্রি করা জায়েজ।

10) রিবা কাকে বলে?

উত্তরঃ শরীয়াহ্-এর পরিভাষায় – প্রদেয় ঋণের উপর আসলের অতিরিক্ত যে অর্থ আদায় করা হয় তাই রিবা বা সুদ ।

11) রিবা কত প্রকার?

উত্তরঃ রিবা সাধারণত ০২ (দুই) প্রকার।

12) রিবার প্রকারগুলো কি কিঃ-

উত্তরঃ (i) রিবা আন-নাসিয়া ও (ii) রিবা আল-ফদল।

13) রিবা আন-নাসিয়া কাকে বলে?

উত্তরঃ রিবা নাসিয়া হল ঋণের উপর সময়ের প্রেক্ষিতে ধার্যকৃত অতিরিক্ত অর্থ বা পণ্য।

14) রিবা আল-ফদল কাকে বলে?

উত্তরঃ সমজাতীয় পণ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে যদি অতিরিক্ত পণ্য বা অর্থের আদান-প্রদান করা হয় তবে তাকে রিবা ফদল বলে।

15) বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকগুলো কোন প্রকার রিবা নিয়ে কাজ করে থাকে?

উত্তরঃ রিবা নাসিয়া।

16) রিবা নিষিদ্ধ সংক্রান্ত আয়াত ও হাদিসঃ-

সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৫-

অর্থঃ যারা সুদ খায়, তারা তার ন্যায় (কবর থেকে) উঠবে, যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল বানিয়ে দেয়। এটা এ জন্য যে, তারা বলে ক্রয় বিক্রয় সুদের মতই। অথচ আল্লাহ ব্যবসা-বাণিজ্য হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন । অতঃপর যার নিকট তার রবের পক্ষ থেকে উপদেশবাণী পৌঁছল এবং সে বিরত হল, পূর্বে যা (সুদের আদান-প্রদান) হয়ে গেছে, তা তারই, তার বিষয় আল্লাহর জিন্মায় এবং আর যারা পুনরায় আরম্ভ করবে তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।

সূরা আর-রুম, আয়াত ৩৯ -

অর্থঃ মানুষের ধন-সম্পদে তোমাদের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, এই আশায় তোমরা সুদে যা কিছু দাও, আল্লাহর কাছে তা বৃদ্ধি পায় না। পক্ষান্তরে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় যারা যাকাত দিয়ে থাকে, অতএব, তারাই দ্বিগুণ লাভ করে।

সূরা আন-নিসা, আয়াত ১৬১-

অর্থঃ আর এ কারণে যে, তারা সুদ গ্রহণ করত, অথচ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল এবং এ কারণে যে, তারা অপরের সম্পদ ভোগ করত অন্যায় ভাবে। বস্তুত; আমি (আল্লাহ) কাফেরদের জন্য তৈরী করে রেখেছি বেদনাদায়ক আযাব।

সূরা আল-ইমরান আয়াত ১৩০-

অর্থঃ হে মুমিনগণ! তোমরা সুদ খেও না ক্রমবর্ধিতভাবে, আল্লাহকে ভয় কর যেন তোমরা সফলকাম হতে পার।

রিবা বিষয়ক কয়েকটি হাদিসঃ-

(i) জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সুদ গ্রহীতা, সুদ দাতা, সুদের লেখক ও সুদের সাক্ষী সকলের উপর অভিশাপ প্রদান করেছেন এবং বলেছেন, তারা সকলেই সমান অপরাধী । (সহীহ মুসলিম)

(ii) আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তাঁর অধিকার হিসেবে নিম্নোক্ত চার শ্রেণীর ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না এবং তার নেয়ামতের স্বাদ ও আস্বাদন করাবেন না।

(১) শরাব (মদ) পানে অভ্যস্ত ব্যক্তি;
(২) সুদখোর ব্যক্তি;
(৩) এতিমের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণকারী;
(৪) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান।

(মুস্তাদরাকে হাকিম)

(iii) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ইসরার রাতে (শবে মিরাজে) আমি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হয়েছিলাম, যাদের পেট ছিল সাপে ভর্তি ঘরের মত; পেটের বাইরে থেকে সাপগুলো দেখা যাচ্ছিল । তখন আমি বললাম, হে জিবরাইল! এরা কারা? তিনি জবাব দিলেন, এরা হলো সুদখোর।

(ইবনে মাজাহ)

(iv) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক জিনিস থেকে বিরত থাকবে । সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সেই সাতটি জিনিস কী কী? তিনি বললেন, সেগুলো হচ্ছেঃ

(iv) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক জিনিস থেকে বিরত থাকবে । সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সেই সাতটি জিনিস কী কী? তিনি বললেন, সেগুলো হচ্ছেঃ

(১) আল্লাহর সাথে শরীক করা;
(২) জাদু করা; অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা;
(৪) সুদ খাওয়া;
(৫) এতিমের সম্পদ ভক্ষণ করা;
(৬) জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা এবং
(৭) কোন সতী-সাধ্বী মুমিন মহিলাকে অপবাদ দেয়া।

(সহীহ বুখারী, মুসলিম ও আবু দাউদ)

(v) অবশ্যই মানুষের কাছে এমন এক যুগ আসবে তারা মসজিদ গুলোতে একত্রিত হবে এবং সালাত আদায় করবে কিন্তু তাদের মধ্যে একজনও মুমিন নেই। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর এই কথা শুনে সাহাবীরা আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কোন সময়ে এ ধরনের বিপর্যয়কর পরিস্থিতি আসবে হে আল্লাহর রাসুল? তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, যখনঃ

(১) ঐ মুসল্লিরা সুদ খাবে এবং
(২) সুউচ্চ অট্টালিকা নির্মাণ করবে।

(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা)

17) সুদের বৈশিষ্ট্য সমূহঃ-

(i) সুদের উদ্ভব হয় ঋণের ক্ষেত্রে। ঋণ নগদ অর্থে হোক অথবা পণ্য সামগ্রী আকারে হোক;
(ii) ঋণের শর্ত হিসেবে আসলের উপর অতিরিক্ত ধার্য করা;
(iii) অতিরিক্ত অংশের জন্য কোন বিনিময় না দেয়া।

18) শতকরা (%) হার কি সুদ?

উত্তরঃ শতকরা হার সুদ নয়। এটি একটি গাণিতিক বা পরিসংখ্যানিক প্রকাশভঙ্গি মাত্র যা সহজে বোধগম্য ও সর্বজনগ্রাহ্য।

19) নির্ধারিত হার কি সুদ?

উত্তরঃ নির্ধারিত হার হলেই সুদ হবে তা নয়। প্রকৃতপক্ষে, দামের ক্ষেত্রে বা ব্যবসায়িক সুবিধার্থে নির্ধারিত হার ব্যবহার করা একটি আধুনিক ব্যবসায়িক রীতি বা পদ্ধতি যার সাথে সুদকে সংশ্লিষ্ট করা যুক্তি সংগত নয় ।

ইসলামিক ব্যাংকিং পদ্ধতিতে আমানত (Deposit) বিষয়ক Knowledge Sharing

More..

1) বাংলাদেশে পরিচালিত ইসলামিক ব্যাংকসমূহ কয়টি নীতির ভিত্তিতে আমানত (Deposit) গ্রহণ করে?

উত্তরঃ ০২ (দুই) টি নীতির ভিত্তিতে।

2) আমানত (Deposit) সংগ্রহের নীতিগুলো কী?

উত্তরঃ (i) আল-ওয়াদিয়াহ্‌ এবং (ii) মুদারাবা।

3) আল ওয়াদিয়াহ্‌ কী?

উত্তরঃ আমানতকারীর জমাকৃত অর্থ ব্যবহারের অনুমতিসহ যে কাহারো নিকট আমানত রাখা ।

4) মুদারাবা কাকে বলে?

উত্তরঃ মুদারাবা শব্দটি দারবুন, থেকে এসেছে। দারবুন এর অর্থ রিযিকের অন্বেষণে সফর করা ৷ মুদারাবা কারবারে দুটো পক্ষ থাকে যেখানে এক পক্ষ (সাহিবুল মাল/ রাব্বুল মাল) চুক্তি অনুযায়ী মূলধন বা পূঁজি বিনিয়োগ করেন এবং অপর পক্ষ (মুদারিব) তার দক্ষতা, শ্রম ও ব্যবস্থাপনা বিনিয়োগের ভিত্তিতে কারবার বা ব্যবসা পরিচালনা করেন । ব্যবসায়ে লাভ হলে চুক্তি অনুযায়ী পূর্বনির্ধারিত হারে লাভ বণ্টিত হয় এবং লোকসান হলে মূলধন সরবরাহকারী উক্ত লোকসান বহন করে কিন্তু মুদারিবের অবহেলাজনিত কারণে লোকসান হলে মুদারিবকেই লোকসানের দায় বহন করতে হয় ৷

5) মুদারাবা ব্যবসার পক্ষগুলো কারা?
উত্তরঃ (i) সাহিবুল মাল অথবা রাব্বুল মাল (মূলধন/পূঁজি সরবরাহকারী)
(ii) মুদারিব (পূঁজি/মূলধন ব্যবস্থাপক)
6) ডিপোজিটর বা Customer এর কাছ থেকে আমানত গ্রহণের ক্ষেত্রে Bank কোন পক্ষ হিসেবে কাজ করে?

উত্তরঃ মুদারিব ।

7) মুদারাবা ব্যবসায়ে লাভ কীভাবে বণ্টিত হয়?

উত্তরঃ পূর্ব নির্ধারিত আনুপাতিক হারে। উদাহরণ স্বরূপঃ ৫০:৫০ বা ৮০:২০

8) মুদারাবা ব্যবসায়ে লোকসান কীভাবে বহন করা হয়?

উত্তরঃ মূলধন প্রদানকারী (রাব্বুল মাল) লোকসান বহন করবে। একের অধিক মূলধন প্রদানকারী (রাব্বুল মাল) হলে, যার মূলধন যে পরিমাণ তিনি সেই পরিমাণ লোকসান বহন করবে।

9) মুদারাবা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ২য় পক্ষ বা মুদারিবের অবহেলাজনিত কারণে কোন লোকসান হলে কে বহন করবে?

উত্তরঃ মুদারিব (পূঁজি/মূলধন ব্যবস্থাপক)।

ইসলামিক ব্যাংকিং পদ্ধতিতে বিনিয়োগ (Investment) বিষয়ক Knowledge Sharing

More..

1) ইসলামী ব্যাংকিং কয়টি নীতির ভিত্তিতে অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে?

উত্তরঃ ইসলামী ব্যাংকিং প্রধানত ০৩ (তিন) টি নীতির ভিত্তিতে অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে।

2) ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ পদ্ধতিগুলি কি?
উত্তরঃ
(i) ক্রয়-বিক্রয় পদ্ধতি; (Bai Mechanism).
(ii) অংশীদারিত্ব ভিত্তিক পদ্ধতি; (Share Mechanism).
(iii) ভাড়া ভিত্তিক পদ্ধতি; (Lease Mechanism).
3) ক্রয়-বিক্রয় পদ্ধতি; (Bai Mechanism) কি?

উত্তরঃ শরীয়াহ্‌ নীতিমালা অনুস্মরণ করে যে কোন পণ্য বেচা-কেনা করাকে ক্রয়-বিক্রয় পদ্ধতি বা Bai Mechanism বুঝায়। এর জন্য ব্যাংকে কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে, যেমনঃ বাই-মুরাবাহা, বাই-মুয়াজ্জাল, বাই-সালাম, বাই-ইস্তিসনা ইত্যাদি।

4) অংশীদারিত্ব ভিত্তিক পদ্ধতি; (Share Mechanism) কি?

উত্তরঃ যে কারবারে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি মূলধন যোগান দেয়, সকলে অথবা কেউ কেউ কারবারে ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় অংশ নিয়ে চুক্তি অনুযায়ী লাভ নেয় এবং লোকসান হলে মূলধন অনুপাতে বহন করে তাকে অংশীদারিত্ব ভিত্তিক পদ্ধতি বা Share Mechanism বলে। যেমনঃ মুশারাকা।

5) ভাড়া ভিত্তিক পদ্ধতি; (Lease Mechanism) কি?

উত্তরঃ শরীয়াহ্‌ পদ্ধতি অনুস্বরণ করে স্থায়ী বা অস্থায়ী সম্পদ ইজারা/ভাড়া প্রদানের মাধ্যমে যে চুক্তি সম্পাদিত হয় তাকে ভাড়া ভিত্তিক পদ্ধতি বা Lease Mechanism বলে। যেমনঃ ইজারা বা HPSM।

6) মুশারাকা বিনিয়োগ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে কারবারে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি মূলধন যোগান দেয়, সকলে অথবা কেউ কেউ কারবারে ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় অংশ নিয়ে চুক্তি অনুযায়ী লাভ নেয় এবং লোকসান হলে মূলধন অনুপাতে বহন করে তাকে মুশারাকা বিনিয়োগ বলে ।

7) মুরাবাহা কাকে বলে?

উত্তরঃ নগদে অথবা ভবিষ্যতে নির্ধারিত কোন সময়ে একসাথে অথবা নির্ধারিত কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের শর্তে বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়ের সম্মতিক্রমে ক্রয়মূল্যের উপর নির্ধারিত লভ্যাংশ ধার্য করে শরীয়াহ্ অনুমোদিত পণ্য সামগ্রী বিক্রয় করাকে মুরাবাহা বলে ।

মেঘনা ইসলামিক ব্যাংকিং সম্পর্কিত তথ্যঃ

More..

1. মেঘনা ইসলামিক ব্যাংকিং এর কার্যক্রম কি মেঘনা কনভেনশনাল ব্যাংকিং থেকে ভিন্ন?

উত্তরঃ মেঘনা ইসলামিক ব্যাংকিং শরীয়াহ্‌ ভিত্তিক পরিচালিত একটি পৃথক ব্যাংকিং ব্যবস্থা। যার ফলে মেঘনা ব্যাংকের কনভেনশনাল ব্যাংকিং ব্যবস্থার সাথে মেঘনা ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম, হিসাব নিকাশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। কনভেনশনাল ব্যাংকিং এবং ইসলামিক ব্যাংকিং এর কার্যক্রম একত্রিত করা হয় না।

2. ইসলামিক ব্যাংকিং এর অপারেশন, ডিপোজিট ও বিনিয়োগ কি কনভেনশনালের সাথে পরিচালিত হয়?

উত্তরঃ ইসলামিক ব্যাংকিং এর অপারেশন, ডিপোজিট ও বিনিয়োগ পরিচালনার জন্য শরীয়াহ্‌ ভিত্তিক পৃথক নীতিমালা রয়েছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের শরীয়াহ্‌ গাইডলাইন ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শরীয়াহ্‌ গাইডলাইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যার ফলে ইসলামিক ব্যাংকিং এর অপারেশন, ডিপোজিট ও বিনিয়োগ পৃথক নীতিমালায় পরিচালিত হয়।

3. শরিয়াহ্‌ বোর্ডের সদস্য কারা?

উত্তরঃ মেঘনা ইসলামিক বাংকিংয়ের শরীয়াহ্‌ বোর্ড; ব্যাংকিং ও শরীয়াহ্‌ সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত। শরীয়াহ্‌ বোর্ডের সদস্যগণ হলেনঃ

ক. শায়েখ ড. আনোয়ার হোসেন মোল্লা।
খ. শায়েখ ড. মোঃ মনজুর-ই-ইলাহী।
গ. শায়েখ ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
ঘ. জনাব মোঃ ফরিদউদ্দিন আহমেদ।
ঙ. ড. মোঃ মোহাব্বাত হোসেন।
4. ইসলামিক ব্যাংকিং এ নিয়মিত শরিয়াহ্‌ অডিট করা হয় কি?

উত্তরঃ ইসলামি ব্যাংকিংয়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে পৃথক শরীয়াহ্‌ অডিট নীতিমালা রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ইসলামিক স্কলারদের তত্ত্বাবধানে শরীয়াহ্‌ অডিট সম্পাদন করা হয়।

5. ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের লভ্যাংশের বণ্টনের পদ্ধতি কি?

উত্তরঃ ইসলামিক ব্যাংকিং সাধারণত পূর্বনির্ধারিত অনুপাতিকহারে লভ্যাংশ গ্রাহকদের মাঝে বণ্টন করে। উদাহরণ সরূপ, ১০০ টাকা লাভ হলে ৬০:৪০ আনুপাতিক হারে (কম বা বেশি হতে পারে) গ্রাহক ৬০ টাকা এবং ব্যাংক ৪০ টাকা পাবে।

6. যদি কোনো গ্রাহক নির্ধারিত সময়ে পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাকে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হয় কি?

উত্তরঃ যদি কোন গ্রাহক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হয়, সে ক্ষেত্রে গ্রাহককে জারিমানা প্রদান করতে হয়। উল্লেখ্য, জরিমানা থেকে প্রাপ্ত অর্থ ইসলামিক ব্যাংক আয় হিসেবে গ্রহণ করে না, এটি জনকল্যানমূলক কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়।

7. অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আপনারা কি বিনিয়োগ করেন?

উত্তরঃ জ্বি, নীতিমালায় উত্তীর্ণ হলে ইসলামিক ব্যাংকিং অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিনিয়োগ করে থাকে।

8. বিনিয়োগের খাত সমূহ কি কি? আপনারা কোন কোন খাতে বিনিয়োগ করেন?

উত্তরঃ ইসলামিক ব্যাংকিং শরীয়াহ্‌ নীতিমালা অনুস্মরণ করে বিনিয়োগ করে থাকে, যার ফলে শরীয়াহ্‌ নিষিদ্ধ কোন খাতে ইসলামিক ব্যাংকিং বিনিয়োগ করে না, যেমন- সুদ/রিবা, গারার/ধোকা, মায়সির/জুয়া অথবা এমন পণ্য যে গুলি শরীয়াহ্‌ নিষিদ্ধ করেছে, যেমন এলকোহল/মদ, শুকর, মাদকদ্রব্য ইত্যাদিতে ইসলামিক ব্যাংকিং বিনিয়োগ করে না। এ ছাড়া অন্যসব হালাল খাতে বিনিয়োগ করে।

9. ডিপোজিটের জন্য আপনাদের ব্যাংক এ কি কি পদ্ধতি আছে?

উত্তরঃ ডিপোজিটের জন্য সাধারণত আমাদের ব্যাংক এ দুই ধরণের পদ্ধতি রয়েছে তা হলঃ আল-ওয়াদিয়াহ্‌ পদ্ধতিঃ গ্রাহক যে কোন পরিমাণ টাকা এ একাউন্টে জমা রাখতে পারবে। গ্রাহকের অর্থ ব্যাংক এর নিকট আমানত হিসেবে গণ্য হবে। গ্রাহক যে কোন সময় অত্র একাউন্ট এর টাকা উত্তোলন ও জমা করতে পারবে। মুদারাবা সেভিংস পদ্ধতিঃ এটি এমন একটি ডিপোজিট পদ্ধতি যেখানে গ্রাহক যে কোন পরিমাণ টাকা নির্দিষ্ট পরিমাণ সময়ের জন্য জমা রাখতে পারবে গ্রাহককে মুদারাবা/শরীয়াহ্‌ নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবসা থেকে অর্জিত লভ্যাংশ প্রদান করা হবে। অর্জিত লভ্যাংশ কম অথবা বেশী হতে পারে।

10. আল-ওয়াদিয়াহ্‌ পদ্ধতির একাউন্ট এ জমাকৃত অর্থ যেকোনো সময়ে উত্তোলন করা যায় কি?

উত্তরঃ জ্বি, আল-ওয়াদিয়াহ্‌ একাউন্ট এর জমাকৃত অর্থ যে কোন সময় উত্তোলন করা যায়। ইহা কনভেনশনাল ব্যাংকিং এর কারেন্ট একাউন্ট এর বিকল্প।

11. সেভিংস একাউন্ট গ্রাহককে কি কোন ধরণের লভ্যাংশ দেয়া হয়?

উত্তরঃ সেভিংস একাউন্ট গ্রাহককে মুদারাবা নীতিমালার আওতায় ব্যবসায় বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যার ফলে শরীয়াহ্‌ নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবসায় অর্জিত লভ্যাংশ পূর্বনির্ধারিত আনুপাতিক হারে গ্রাহকের সাথে শেয়ার করা হয়, যেমন ৮০:২০।

12. কভেনশনাল ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টের অর্জিত সুদের সাথে ইসলামিক ব্যাংকের মুনাফার পার্থক্য কোথায়?

উত্তরঃ কনভেনশনাল ব্যাংকের অর্জিত সুদ নির্ধারিত, যেখানে ডিপোজিটরকে বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। বিপরীতে ইসলামী ব্যাংকিং এর সেভিংস একাউন্ট হোল্ডারকে ব্যবসায় বিনিয়োগকারী হিসেবে গণ্য করা হয়। যেখানে আয় সরাসরি ব্যবসা থেকে অর্জিত, যা কম বেশি হতে পারে। আবার লোকসান হবার ও সম্ভাবনা থাকে। উভয় ক্ষেত্রেই যাহা গ্রাহকের সাথে শেয়ার করা হয়।

13. মুদারাবা সেভিংস একাউন্টে লভ্যাংশ প্রদানের হার কেমন? অন্যান্য ব্যাংক থেকে বেশি না কম?

উত্তরঃ ইসলামিক ব্যাংকিং এর লভ্যাংশ মাসিক আয় অনুপাতে ক্যালকুলেশন করা হয়। উল্লেখ্য যে ইসলামিক ব্যাংকিং এর লাভ প্রতি মাসে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা ধীরে ধীরে আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।

14. আল-ওয়াদিয়াহ্‌ কারেন্ট একাউন্টে কোনো ধরণের লভ্যাংশ প্রদান করা হয় কিনা?

উত্তরঃ আল-ওয়াদিয়াহ্‌ কারেন্ট একাউন্টে কোন লভ্যাংশ প্রদান করা হয় না।

15. আল-ওয়াদিয়াহ্‌ কারেন্ট একাউন্টের জন্য বাৎসরিক কোন ফী কর্তন করা হয়?

উত্তরঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী আল-ওয়াদিয়াহ্‌ কারেন্ট একাউন্টের জন্য ব্যাংক সার্ভিস চার্জ বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি কর্তন করে থাকে।

16. সেভিংস একাউন্টের জন্য বাৎসরিক কোন ফী কর্তন করা হয়?

উত্তরঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী সেভিংস একাউন্টের জন্য ব্যাংক সার্ভিস চার্জ বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি কর্তন করে থাকে।

17. আপনাদের ব্যাংক এ কি ধরণের ডিপোজিট একাউন্ট আছে?

উত্তরঃ আমাদের ব্যাংকের ডিপোজিট একাউন্টগুলি হলঃ

1. Al-Wadiah Current Account
2. Mudarabah Term Deposit Account
3. Mudarabah Short Notice Deposit Account
4. Mudarabah Savings Account
5. Mudarabah Bibaho Savings Account
6. Mudarabah Hajj Savings Account (MHSA)
7. Mudarabah Mohor Savings Account
8. Mudarabah Monthly Profit Deposit Scheme Account
9. Mudarabah NRB Savings Bond (MNSB) Account
10. Mudarabah Special Savings (Pension) Account
11. Mudarabah Waqf Cash Deposit Account
12. Mudarabah Business DPS
13. Mudarabah Supreme Account
14. Mudarabah Supreme Plus Account
15. Al-Wadiah Global FC Current Account
16. Mudarabah RFC Savings Account
17. Mudarabah Payroll Account
18. Mudarabah Fast Remit Savings Account
19. Mudarabah Fifty Plus Savings Account
20. Mudarabah Youngster Savings Account
21. Mudarabah Youngster Plus Savings Account
22. Mudarabah NFC Term Deposit Account
23. Mudarabah Islamic Business Plus Account
18. যদি কোন গ্রাহকের টাকার প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে শরিয়াহ্‌ পদ্ধতিতে কিভাবে আপনারা তাকে অর্থায়ন করেন?

উত্তরঃ গ্রাহকের চাহিদার ধরণ অনুযায়ী বিনিয়োগের পদ্ধতি ভিন্ন হয়ে থাকে। ব্যাংক সাধারণত তিন ধরনের শরীয়াহ্‌ মূলনীতির ভিত্তিতে বিনিয়োগ করে।

a. ক্রয় ও বিক্রয় : ব্যাংক কাস্টমার এর নিকট পণ্য বিক্রি করে। কাস্টমার এককালীন অথবা কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ করে।

ক্রয় বিক্রয়ের শরীয়াহ্‌ পদ্ধতি সমূহ:
i. মুরাবাহা
ii. বাই মুয়াজ্জাল
iii. বাই সালাম
iv. বাই ইস্তিসনা ইত্যাদি

b. Lease বা ইজারা পদ্ধতি : এ ধরনের পদ্ধতিতে ব্যাংক পণ্য ক্রয় করে তা গ্রাহকের নিকট ভাড়ায় প্রদান করে। পণ্য ব্যাংকের মালিকানায় থাকে। বিনিয়োগ পরিশোধ সাপেক্ষে গ্রাহক চাইলে পণ্য ব্যাংক থেকে কিনে নিতে পারে। যেমন : ইজারা, HPSM।

c. যৌথ মালিকানা পদ্ধতি বা অংশীদারিত্ব: যেখানে ব্যাংক যৌথ মালিকানার ভিত্তিতে বিনিয়োগ করে ব্যবসায় অর্জিত লাভ অথবা লোকসান ব্যাংক ও গ্রাহকের মাঝে শেয়ার করে। যেমন – মুদারাবা, মুশারাকা।

19. ব্যাংক কি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে গ্রাহকের সাথে ব্যবসা করে?

উত্তরঃ জি, ব্যাংক গ্রাহকের সাথে পার্টনারশিপ ভিত্তিতে বিনিয়োগ করে। সে ক্ষেত্রে গ্রাহক যদি বিনিয়োগের সকল শর্ত পূরণ করতে পারে।

20. Credit Card এর ব্যবহার কী জায়েজ?

উত্তরঃ সুদ বা শরীয়াহ্ নিষিদ্ধ উপাদান থাকলে Credit Card এর ব্যবহার নিষিদ্ধ। তবে শরীয়াহ্‌ নীতিমালা অনুযায়ী হলে তা ব্যবহার করা যেতে পারে।

© Meghna Bank PLC. All rights reserved.

Follow Us

×

আপনার যেকোনো ব্যাংকিং সংক্রান্ত সমস্যা আমাদের জানান

মেঘনা ব্যাংক এ যেকোনো সেবা নিতে গিয়ে যদি আপনি কোন সমস্যা বা হয়রানির মুখোমুখি হন, তবে এখানে জানান

right popup